বর্তমানে আমাদের সবার হাতেই মোবাইল রয়েছে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, ঘুরতে যাওয়া, ভ্রমণ, আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণ করে রাখি। ভিডিও তৈরি করলেন আর সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে দিলেন বিষয়টি এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে আপনার কনটেন্টটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির কিনা বা আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার বন্ধু মহল এবং অনুসারীরা পছন্দ করবে কি না।
হয়তো আপনার কোন ব্যবসা রয়েছে তার এডভারটাইজমেন্টের জন্য আপনি ভিডিও তৈরি করছেন নয়তোবা আপনি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফেসবুক, ইউটিউব সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও আপলোড করে থাকেন আপনার অনুসারীদের জন্য। প্রোডাক্ট মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্য ভিডিও হচ্ছে সেরা মাধ্যম। ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করা অনেক সহজ। তবে আপনাকে বিশ্বাস হবে যে উন্নত মানের ভিডিও তৈরি করা একটি ব্যয়বহুল, শ্রমসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। সৌভাগ্যবশত, আজকের উন্নত প্রযুক্তি ভিডিও তৈরীর প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।
আজকে থেকে ভালো মানের কনটেন্ট বাড়ানোর জন্য উন্নত মানের ক্যামেরা এবং ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার করার প্রয়োজন হবে না। অনেক স্মার্টফোনে অত্যাধুনিক ক্যামেরা থাকায় উন্নত মানের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা যাচ্ছে। এবং কিছু ভালো মানের সফটওয়্যার থাকায় মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও সহজেই এডিট করতে পারবেন। আজকে তা নিয়েই আলোচনা করব।
১. Filmora Video Editor
Image source: filmora
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
Filmora Video Editor এর পূর্বের নাম ছিল FilmoraGo Video Editor – ইউটিউব এবং টিক টকের জন্য এটি একটি সহজে ব্যবহারযোগ্য ভিডিও এডিটর এবং ১০০০ মিউজিক, ৫০০০টিরও বেশি স্টিকার এবং ফিল্টার, টেক্সট, অডিও, ইমোজি, ব্যাকগ্রাউন্ড ইত্যাদি সহ মুভি মেকার। কয়েক মিনিটের মধ্যে অবিশ্বাস্য ভিডিও তৈরি করতে মিউজিক, ট্রানজিশন ইফেক্ট, টেক্সট, ইমোজি এবং ফিল্টার যোগ করুন। এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে টেমপ্লেটগুলির সাহায্যে আপনি TikTok, Instagram Reels, Facebook Reels, YouTube বা যেখানে খুশি সে অনুযায়ী আপনার নিজের ভিডিও তৈরি করতে সাহায্য করবে। এ্যাপে প্রিমিয়াম সুবিধাও রয়েছে। প্রথমবারের মতো ২,৫০০ টাকা পে করলে ওয়াটারমার্ক রিমোভ করতে পারবেন, 1080p HD ভিডিও পাবেন এবং ৫০০০+ প্রিমিয়াম স্টিকার এবং টেমপ্লেট পাবেন।
২. Quik
Image source: unsplash
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
এটি জনপ্রিয় একশন ক্যামেরা কোম্পানি গো প্রো দ্বারা নির্মিত এ্যআপ। আপনার ভিডিওতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রানজিশন এবং ভিডিও এফেক্ট যোগ করা সহ অন্যান্য কাজগুলো করতে পারে, ভিডিও ক্লিপ ট্রিম করা, ভিডিও স্পিড বাড়ানো কমানো, টাইটেল কার্ড যোগ করতে পারবেন শুধুমাত্র কয়েকটা স্টেপ ফলো করেই। আপনি অ্যাপের অন্তর্নির্মিত লাইব্রেরি থেকে মিউজিক ব্যবহার করে আপনার ভিডিওগুলোকে আরও উন্নত করতে পারেন ৷ এমনকি এই এ্যাপ থেকে এডিটকৃত ভিডিওটি সরাসরি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইলে আপলোড করতে পারবেন। আপনি যদি ভিডিও তৈরিতে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে Quik অ্যাপ হল একটি সেরা বিনামূল্যের সফ্টওয়্যার সমাধান।
৩. Splice
Image source: app.apple.com
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
এই অ্যাপটিও GoPro ডেভেলপারদের দ্বারা তৈরি যা দিয়ে বিনামূল্যে আপনার পছন্দমত ভিডিও এডিট করতে পারবেন। এই অ্যাপটি আপনার ভিডিওগুলোকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ম্যানুয়াল ভাবে বিভিন্ন ট্রানজেকশন, টেক্সট, ওভারলে এবং ফিল্টার যোগ করতে পারবেন। অ্যাপের সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন মিউজিক লাইব্রেরী থেকে মিউজিক ট্র্যাক এবং সাউন্ড এফেক্ট ব্যবহার করতে পারবেন। এই অ্যাপটি এ্যাপলসহ এন্ড্রয়েড ডিভাইসেও ব্যবহার করতে পারবেন এবং আপনি চাইলে ওদের ডেস্কটপ ভার্সনা সফ্টওয়্যারও ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: কম দামে ভালো স্মার্টফোন কিনুন
৪. InShot
Image source: inshot
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য এই অ্যাপটি খুবই জনপ্রিয়। গুগল প্লে স্টোরে এই অ্যাপটি ৫০০মিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড করা হয়েছে এবং ১৮ মিলিয়ন প্লাস ইউজার মন্তব্য করেছেন। তারসাথে এ্যাপল স্টোরেও এর জনপ্রিয়তা কম নয়। In shot পেশাদার বৈশিষ্ট্য সহ শক্তিশালী অল-ইন-ওয়ান ভিডিও সম্পাদক এবং ভিডিও মেকার। ভিডিওর জন্য মিউজিক, টেক্সট, ট্রানজিশন ইফেক্ট যোগ করা, স্মুথ স্লো মোশন, ভিডিও কোলাজ করুন, ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করা এবং ইত্যাদি দুর্দান্ত সুবিধাসমূহ রয়েছে। আপনি এটার প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করে ওয়াটারমার্ক রিমুভসহ আরো বিস্তর সব ফিচারস ব্যবহার করতে পারবেন।
৫. Adobe Premiere Rush
Image source: Adobe Premiere Rush
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
যেকোনো জায়গায় অনলাইন ভিডিও শুট করুন, এডিট করুন এবং শেয়ার করুন।
Adobe Premiere Rush এর মাধ্যমে অল-ইন-ওয়ান, ক্রস-ডিভাইস ভিডিও এডিটিং করে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলির চাহিদা পূরণ করুন ৷ শক্তিশালী ফিচারসগুলো আপনাকে দ্রুত ভিডিও তৈরি করতে সহায়তা করবে যা প্রপোশনাল ভিডিও এডির্টিংয়ের মত দেখায় এবং আপনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে আপনার ভিডিও কন্টেন্টকে পূর্ণাঙ্গ রুপ দিতে পারবেন। সরাসরি অ্যাপ থেকে আপনার প্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যানেলে শেয়ার করুন । সীমাহীন ইম্পোর্টের সাথে যতক্ষণ আপনি চান তা বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। এবং এটির প্রিমিয়াম সুবিধা নিয়ে এর সমস্ত প্রিমিয়াম বৈশিষ্ট্য এবং শত শত সাউন্ডট্র্যাক, সাউন্ড এফেক্ট, লুপ, অ্যানিমেটেড শিরোনাম, ওভারলে অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
৬. LumaFusion
Image source: LumaFusion
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
LumaFusion মোবাইল ডিভাইসের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী, পুরস্কার বিজয়ী ভিডিও এডিটর এখন Android এবং ChromeOS-এর জন্য উপযোগী ! এখন আপনি Fluid, intuitive and natural multitouch screen অভিজ্ঞতার সাথে পেশাদার-ক্যালিবার ভিডিও সম্পাদনার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন যা টাচ স্ক্রীন দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। LumaFusion একটি সহজ, মার্জিত অথচ শক্তিশালী ভিডিও সম্পাদনার অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করে, পোস্ট প্রোডাকশন ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞদের দ্বারা চিন্তাভাবনা করে এটি ডিজাইন করা হয়েছে এবং সবকিছুই একটি স্বজ্ঞাত এবং অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প বলার পরিবেশের মধ্যে যা আক্ষরিক অর্থেই আপনাকে মুগ্ধ করবে। এতে 4K UHD ফুটেজ সাপোর্ট করে এবং কী ফ্রেমিং এবং কালার সংশোধনের মতো উন্নত পিচারস রয়েছে যার মাধ্যমে আপনার ভিডিও কন্টেন্টকে আরো জীবন্ত করে তুলবে।
আরও পড়ুন: ভিডিও কন্টেন্টের জন্য কপিরাইট ফ্রী মিউজিক
৭. KineMaster
Image source: KineMaster
ডাউনলোড লিংক : Android | | iOS
KineMaster অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং এ্যাপসগুলির মধ্যে একটি। এই জনপ্রিয় অ্যাপটি দিয়ে আপনি ছবি এবং কন্টেন্ট ভিডিও এবং একাধিক অডিও একত্রিত করতে পারবেন। আপনি বিভিন্ন ইফেক্ট এবং 3D ট্রান্জিশন যোগ করতে পারবেন। যে কারনে এটিকে অন্যান্য অ্যাপ থেকে আলাদা করে তা হল এটি আপনাকে ফ্রেম-বাই-ফ্রেম নির্ভুলতার সাথে ভিডিও এডিটিং সম্পাদনা করতে দেয় এবং আপনার এডিটকৃত ভিডিও কেমন হয়েছে তা দেখতে পারবেন । এই এ্যাপটির একটি সমস্যা হচ্ছে ভিডিওর শেষে একটি ওয়াটারমার্ক থেকে যায় আর আপনি যদি তাদের প্রিমিয়াম সুবিধা ব্যবহার করেন তাহলে এর তেকে পরিত্রান পেতে পারবেন।